প্রয়াত তিন সাংবাদিককে স্মরণ করলো নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাব
Published On Feb 10, 2022
বাংলাদেশের প্রয়াত তিন প্রথিতযশা সাংবাদিক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ সহ সদ্য প্রয়াত সাংবাদিক শামছুল আলম বেলাল ও পীর হাবিবুর রহমানকে স্মরণ করলো নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাব। স্মরণ সভার আলোচনা পর্বের শুরুতে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। সভায় বক্তারা মরহুম সাংবাদিকদের দেশের সাহসী কলমযোদ্ধা হিসেবে উল্লেখ করে জনগণের কল্যাণে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সমন্নুত রাখতে দেশ ও প্রবাসে সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। খবর ইউএনএ’র।
৮ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি সেন্টারে অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রেসক্লাবের সভাপতি সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা’র সম্পাদক ও টাইম টেলিভিশনের সিইও আবু তাহের। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও বিশেষ দোয়া- মুনাজাত পরিচালনা করেন প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ ও ইয়র্ক বাংলা সম্পাদক রশিদ আহমদ।
প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও আজকাল’র বিশেষ প্রতিনিধি মনোয়ারুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নেন ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাব ও বিএফইউজে’র সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং আজকাল‘র প্রধান সম্পাদক মনজুর আহমদ, নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের উপদেষ্টা মঈনুদ্দীন নাসের, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদ এ খান, সাবেক সভাপতি ও বর্ণমালা.কম সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, সাপ্তাহিক জন্মভুমি সম্পাদক রতন তালুকদার, প্রথম আলো নিউইয়র্ক’র সম্পাদক ইব্রাহিম চৌধুরী খোকন, সাপ্তাহিক প্রবাস সম্পাদক মোহাম্মদ সাঈদ, কলামিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদ, সিনিয়র সাংবাদিক মাইন উদ্দিন আহমেদ ও আবু নাসের চৌধুরী, নিউইয়র্কবাংলা.কম সম্পাদক আকবর হায়দার কিরন, জেবিবিএ’র একাংশের সভাপতি গিয়াস আহমেদ, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্ট কাজী আশরাফ হোসেন নয়ন ও মিনহাজ আহমেদ, বিএমএ নিউইয়র্ক’র ইয়াং ফিজিশিয়ান সেক্রেটারী ডা. বর্নালী হাসান, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাপ্তাহিক হককথা সম্পাদক এবিএম সালাহউদ্দিন আহমেদ, সাপ্তাহিক মুক্তচিন্তা সম্পাদক ফরিদ আলম, এনসিএন টিভি’র বার্তা প্রধান আবিদুর রহিম, প্রেসক্লাবের সহ সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম মজুমদার, সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি এসএম সোলায়মান, ফটো সাংবাদিক নিহার সিদ্দিকী, লেখক মাহবুব রহমান, সৈয়দ সুজাত আলী, কবি ইশতিয়াক আহমেদ রুপু, রওশন হক, শেলী জামান খান, সাপ্তাহিক আজকাল-এর ব্যবস্থাপক আবু বকর সিদ্দিক প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক তোফাজ্জল লিটন ও আজকাল-এর নজরুল ইসলাম সহ আরো অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মরহুম রিয়াজ আহমেদ ছিলেন যেকোন সাংবাদিকেন জন্য ‘আইকন’। ছিলেন আপাদমস্তক সাংবাদিক, আচার-ব্যবহার আর কথাবার্তায় ছিলেন অমায়িক। ছিলেন অনুস্মরণ, অনুকরণীয় মানুষ। ছিলেন লোভ-লালসার উর্ধ্বে। তিনি জাতীয় প্রেসক্লাব, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)-এর শীর্ষ পদে একাধিকবার নির্বাচিত হয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন। কিন্তু কোনদিন কোন লোভ লালসার কাছে মাথানত করেননি। রিয়াজ উদ্দিন আহমেদের সিদ্ধান্তেই স্বৈরাচারী এরশাদের পতন না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে ১১ দিন সংবাদপত্র প্রকাশ বন্ধ ছিলো। কোন হুমকি-ধমকি তাকে টলাতে পারেনি।
সাংবাদিক শামছুল আলম বেলাল সম্পর্কে বক্তারা বলেন, একজন ভালো ও সাহসী সাংবাদিক হিসেবে তার পরিচিতি ছিলো সর্বমহলে। তাকে নিয়ে সাংবাদিকরা গর্ব করতে পারেন।
সাংবাদিক পীর হাবিবুর রহমান সম্পর্কে বক্তারা বলেন, পীর হাবিব হতে চেয়েছিলেন রাজনীতিক, হলেন সাংবাদিক-কলামিস্ট। তিনি ছিলেন সৎ ও সাহসী সাংবাদিক। সত্য প্রকাশে ছিলেন নির্ভিক। ব্যক্তি জীবনে ছিলেন আড্ডাপ্রিয় মানুষ। লেখালেখিতে আওয়ামী লীগ-বিএনপি, জাতীয় পার্টির সমালোচনা করেছেন অকপটে।
বক্তারা বলেন, জন্মের পর মৃত্যু অবধারিত থাকলেও রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, শামছুল আলম বেলাল ও পীর হাবিবুর রহমান অসময়েই চলে গেলেন। তাঁদের মৃত্যুতে পেশাগত সাংবাদিকতায় অপূরণীয় ক্ষতি হলো। বক্তারা তাদের বিদেহী আতœার মাগফেরাত কামনা করেন।